শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ০১:০৬ পূর্বাহ্ন
Title :
বগুড়া বৈষম্য বিরোধী মামলার পলাতক আসামি ডেভিল গ্রেফতার!! দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর আশেকপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হযরত আলী গ্রেফতার!! বগুড়া বনানী বাসস্ট্যান্ডে বিএনপি 13 নম্বর ওয়ার্ডের উদ্যেগে সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বাবা কাজ করেন চাতালে, মা ঝিয়ের কাজ করেন অন্যের বাড়িতে!! বগুড়া জেলা কমিটির উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মদিন পালন বগুড়ায় আলামিন হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে নাটোর বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ! দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে আতিকুর রহমান আহত!! বগুড়া জেলা বিএনপির উদ্যোগে দোয়া ও এতিমদের মধ্যে খাবার বিতরণ সাবেক এমপি জিন্নাহর পুত্র সঞ্জয় কারাগারে!! দস্যুতা মামলার পলাতক আসামী মোমিন গ্রেফতার!!

বগুড়ায় ১৫১ ধারায় চলছে গ্রেপ্তার বাণিজ্য!

Coder Boss
  • Update Time : সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫
  • ২৬ Time View

বগুড়ায় ১৫১ ধারায় চলছে গ্রেপ্তার-বাণিজ্য

সাত মাসে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে চার শতাধিক বেশির ভাগের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনতে পারেনি পুলিশ। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে গ্রেপ্তার ব্যক্তি।

বগুড়ার শাজাহানপুর থানা-পুলিশ ১ আগস্ট দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে টেঙ্গামাগুর এলাকা থেকে রনি আহমেদ নামের এক যুবককে আটক করে। পরদিন তাঁকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় পুলিশ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, টহল পুলিশ দেখে ওই যুবক পালানোর সময় তাঁকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

জামিন শুনানিতে বিচারক আসামির অপরাধ জানতে চাইলে রনি জানান, সেবন করার উদ্দেশ্যে তাঁর কাছে দুটি ইয়াবা বড়ি ছিল। আসামির বক্তব্য এবং পুলিশ প্রতিবেদনে মিল না থাকায় বিচারক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরদিন তাঁকে জামিন দেন আদালত। ইয়াবা পাওয়ার পরেও ১৫১ ধারায় কেন চালান দেওয়া হলো, তা নিয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি আদালত পুলিশের সাধারণ রেকর্ড অফিসার (জিআরও) আশরাফুল ইসলাম। এদিকে রনিকে আটককারী শাজাহানপুর থানার এসআই আল আমিন বলেন, ‘ইয়াবা পাওয়া গেলে মাদক আইনে মামলা হবে। রনির কাছে কোনো কিছু পাওয়া যায়নি।’

শুধু রনি নয়, বগুড়ায় গত সাত মাসে চার শতাধিক ব্যক্তিকে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাঁরা সবাই জামিনে মুক্ত হলেও কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনতে পারেনি পুলিশ। পাবলিক প্রসিকিউটর এবং মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, শুধু ঘুষের জন্য এ কাজ করছে পুলিশ।

এমন আরেকটি ঘটনা ঘটে গত ২১ জুলাই ভোরে। জেলার শেরপুর থানার মহিপুর ইউনিয়নের জামতলা গ্রামে ঘোরাফেরার সময় স্থানীয়রা শাহজামাল প্রামাণিক, শাহীন আহম্মেদ ও তরিকুল ইসলাম বিপ্লব নামের তিন যুবককে চোর সন্দেহ আটক করে পুলিশে দেয়। পুলিশ তাঁদের ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান দেয়। ওদিনই আদালত থেকে তাঁরা জামিনে মুক্ত হন। এ ঘটনার ১৫ দিন পরেও শেরপুর থানা-পুলিশ ওই তিনজনের নামে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনতে পারেনি। ওই তিনজনকে গ্রেপ্তারকারী এসআই সারাফত জামান। তিনিও এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনের বাড়ি শাজাহানপুর থানায়। তাঁদের সম্পর্কে জানতে চেয়ে শাজাহানপুর থানায় বার্তা পাঠানো হয়েছে। বার্তার জবাবের ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বগুড়া জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল বাছেদের মতে, ‘যাঁকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়, তিনি যেমন সুবিধা পান, পাশাপাশি পুলিশও তাঁর কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে থাকে। পুলিশের চরিত্রে এখনো কোনো পরিবর্তন আসেনি।’

আর মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সদরুল আনাম রঞ্জু বলেন, ‘১৫১ ধারা নিয়ে পুলিশ রীতিমতো বাণিজ্য করছে। ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার করা ব্যক্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আদালতে দাখিল করা না হলে সেই ব্যক্তি পরে পুলিশের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা করতে পারেন।’

জেলা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত জেলার ১২টি থানা-পুলিশ ৪১৫ জনকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান করে। যাদের প্রত্যেকে জামিনে মুক্ত হয়েছে ওই দিনই বা তার পরের দিন। ১২ থানার মধ্যে শাজাহানপুর থানায় সাত মাসে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ১৯০ জনকে। এ ছাড়া বগুড়া সদর থানায় ৭৮ জন, শিবগঞ্জ থানায় ২, শেরপুর থানায় ২৩, সোনাতলা থানায় ১৩, গাবতলী থানায় ২৩, সারিয়াকান্দি থানায় ১১, ধুনট থানায় ১১, নন্দীগ্রাম থানায় ১০, আদমদীঘি থানায় ১০, দুপচাঁচিয়া থানায় ২৬ জন এবং কাহালু থানায় ১৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এদিকে ফৌজদারি কার্যবিধিতে উল্লেখ রয়েছে, কোনো ব্যক্তি আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটিত করতে পারে বা পরিকল্পনা করছে এমন আশঙ্কা থাকলে পুলিশ তাকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার করতে পারে। তবে এই ধারায় গ্রেপ্তার ব্যক্তির বিচার বা শাস্তির বিধান নেই।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে দ্রুত ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট অভিযোগের সত্যতা পেলে তাকে কারাগারে পাঠাতে পারেন। বগুড়া আদালতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার হওয়া অধিকাংশের বিরুদ্ধে পুলিশ সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ না এনে অব্যাহতি দিয়ে দেয়।

১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ‘অনেক সময় জনগণ কাউকে আটক করে পুলিশে দেয়, পরে আর মামলা করে না। এসব ব্যক্তিকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ ছাড়া শাজাহানপুর থানা এলাকায় বগুড়া শহরের কিছু অংশ রয়েছে। এসব এলাকায় সন্দেহভাজন ঘোরাঘুরি করে অনেকে। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে ১৫১ ধারায় চালান দিয়ে থাকে।’

সাউথ এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটসের অ্যাডভাইজিং কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সদরুল আনাম রঞ্জু বলেন, ‘হাইকোর্টের আপিলেট ডিভিশনের রায় অনুযায়ী ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ এবং ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার করলে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনতে হবে; কিন্তু পুলিশ তা করছে না। ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তারের নামে পুলিশের বাণিজ্য অব্যাহত রয়েছে। ১৫১ ধারায় কাউকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনতে ব্যর্থ হলে ভুক্তভোগী পুলিশের বিরুদ্ধে অবৈধ গ্রেপ্তারের মামলা করতে পারেন।’

বগুড়া জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল বাছেদ বলেন, পুলিশের চরিত্রে এখনো কোনো পরিবর্তন আসেনি। ১৫১ ধারায় যে ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়, সে-ও আইনের কাছে সুবিধা পায়, পুলিশও তার কাছ থেকে সুবিধা নেয়

কৃতজ্ঞতা : গনেশ দাস, বগুড়া।
আজকের পত্রিকা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Archives

Categories

© All rights reserved © 2025 Coder Boss

Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102