চুরি ও মারপিট সংক্রান্ত মামলা থেকে বাঁচতে অসহায় পরিবারের সাংবাদিক সম্মেলন
মোঃ রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ বগুড়া :: অদ্য ২১/৯/২০২৫ ইং রোজ রবিবার শাহজাহানপুর প্রেসক্লাব বগুড়ায় বেলা ১২ ঘটিকায় অসহায় একগৃহকর্মীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় সংবাদ সম্মেলনের হুবহু কপি তুলে ধরা হলো সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ আসসালামু আলাইকুম আমি মোছা: মমতা বেগম (৩৪) পিতা মৃত মহির সাং ফুলকোট থানা শাহজাহানপুর, জেলা বগুড়া। বর্তমানে আমি এবং আমার ছোট বোন মরিয়ম খাতুন তার ৩ বছর বয়সের এক শিশুর কন্যা সহ উপজেলার রহিমাবাদ উত্তরপাড়ার জনৈক ব্যক্তির বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছি। আমরা দীর্ঘদিন যাবত অন্যের বাসা বাড়িতে গৃহ পরিচারিকার কাজ করে জীবন ধারণ করে আসছি। আমাদের বাবা মারা গেছেন, মা শারীরিকভাবে অসুস্থ, ভিক্ষা করে বেড়ান। আমরা গরিব বলে ছোট বোনের স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। গৃহ পরিচালিতার কাজ করে শিশুকন্যা অসুস্থ মা সহ অভাবী সংসারে কোনরকম জীবন ধারণ করে আসছি। এমতাবস্থায় একটি মিথ্যা চুরি মামলায় গত ৬ এপ্রিল থানা পুলিশ আমার বোন মরিয়ম বেগমকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত আমার বোন মরিয়ম বেগম জেল হাজতে বন্দী রয়েছে। এদিকে তার শিশু কন্যা মায়ের অভাবে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ার পাশাপাশি ক্ষুধার জ্বালায় কাঁদছে। প্রিয় সাংবাদিক ভাই সকল আপনাদেরকে অবগত করছি যে, আমার বোন মরিয়ম খাতুন উপজেলা রহিমাবাদ উত্তরপাড়ায় অন্যান্যদের মধ্যে হাসান আলী মিয়া নামে এক ব্যক্তির বাসায় কাজ করতেন। হাসিনা আলী মিয়ার স্ত্রী বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের একজন সিনিয়র শিক্ষিকা। তাদের দুই মেয়ে বড় মেয়ে বিবাহিতা এবং ছোট মেয়ের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নরত। প্রতিদিনের মতো গত ২৪ শে মার্চ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে আমার বোন মরিয়ম বেগম হাসান আলী মিয়ার বাসায় কাজ করতে গেলে হাসান আলী মিয়ার স্ত্রী হাফিজা খাতুন আমার বোন মরিয়ম বেগমকে বলেন তার বড় মেয়েকে গাড়ি তুলে দিতে যাবেন এবং তোর কাজ করতে হবে না। তখন মরিয়ম বেগম দরজা থেকেই চলে আসেন এবং অন্য বাসায় কাজ করতে চলে যান। একই দিন বেলা পোনে বারোটার দিকে হাফিজা খাতুন তার স্বামী সহ অন্যান্য লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়িতে গিয়ে বলেন মরিয়ম বেগম তার বাসা থেকে পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি করেছে। এই কথা বলে তারা দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালায়। এক পর্যায়ে তারা কিছু না পেয়ে তারা চলে আসেন। বিকেল চারটার দিকে অন্যান্য বাসায় কাজ শেষ করে মরিয়ম বেগম বাড়িতে আসেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে হাফিজা খাতুন ফোন করে মরিয়ম বেগমকে বলেন বাসায় মেহমান আসছে তুই এখন চলে আয় কাজ আছে। তখন মরিয়ম বেগম সরল মনে হাফিজা খাতুনের কাজের উদ্দেশ্যে চলে যান। কিন্তু সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও আমার মরিয়ম বেগম বাড়িতে না ফিরলে তাকে খোঁজার উদ্দেশ্যে আমি এবং আমার মা হাফিজা খাতুনের বাসায় গিয়ে গেট খুলতে বললে তারা গেট খুলতে রাজি হন না। এক পর্যায়ে কান্নাকাটি শুরু করলে হাফেজা খাতুনের স্বামী গেট খুললে ভিতরে ঢুকে দেখতে পায় তারা সবাই মিলে আমার বোন মরিয়ম বেগমকে মারধর করছে। এমনকি আমাদের সামনে তাকে বেদম মারধর করে রক্তাক্ত করে। এ সময় হাফিজা খাতুনের কলেজ পড়ুয়া ছোট মেয়ে মারধর করতে দেখে ভয় পেয়ে রান্নাঘর থেকে স্বর্ণালংকার বের করে এনে বলে আম্মু এই গহনা রান্নাঘরে পাওয়া গেছে আন্টি লুকিয়ে রেখেছিলেন পরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তারপর হাফিজা খাতুন আমার বোন মরিয়ম বেগমকে ধমকাচ্ছিলেন আরো গহনা বের করে দেওয়ার জন্য। এক পর্যায় আমরা বোন মরিয়মকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বললে তারা আমাদেরকে গলা ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন। শাহজাহানপুর থানা পুলিশের আশ্রয় নিলে থানার এসআই নুরুল ইসলাম আমাদেরকে সাথে নিয়ে হাফিজা খাতুনের বাসা থেকে আমার বোন মরিয়ম বেগমকে উদ্ধার করে দুইজন সাক্ষীর স্বাক্ষর নিয়ে থানায় নিয়ে আসেন। পরে মুসলেকা নিয়ে মরিয়ম বেগমকে আমাদের জিম্মায় দেন। কিন্তু আমরা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে চাইলে পুলিশ জিডি করতে রাজি হননি। বাধ্য হয়ে গুরুতর আহত বোন মরিয়মকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করায় পরে জানতে পারি ঘটনার ৩ দিন পর ২৭শে মার্চ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার নাম্বার ৪৪ আইনের ধারা সমূহ ৩৮০/ ৩২৩/ ৫০৬/(২) পেনাল কোড ১৮৬০। অপরাধের শিরোনাম চুরিও মারপিট সংক্রান্ত। চুরি করা ২১ ভরি স্বর্ণের মধ্যে ৩ ভরি স্বর্ণ মরিয়ম বেগম নিজে রান্না ঘরের কার্নিশ থেকে বের করে দিয়েছে। বাকি ১৮ ভরি এখনো বের করে দেয়নি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা সাজানো বরং তাদের ছোট মেয়ে আমাদের সবার সামনে রান্নাঘর থেকে স্বর্ণ বের করে দিয়েছে। এরপর ৬ এপ্রিল আমার বোন মরিয়মকে থানা পুলিশ গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়। এরপর থানা পুলিশ আদালতে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত জেল গেটে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জেল গেটে জিজ্ঞাসা বাদে সুবিধা করতে না পেরে আবারো থানায় রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। পরে আদালত থানায় রিমান্ড মঞ্জুর করেন। থানায় রিমান্ড নিয়ে এসে বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি দেখিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে জোরপূর্বক১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি নেয় পুলিশ। পরে জেলগেটে মরিয়মের সাথে কথা বললে তিনি বলেন তাকে এবং তার শিশু কন্যাকে হত্যা করে বস্তাবন্দী করে গুম করার হুমকি সহ তার উপর নির্যাতন করে তাদের শেখানো স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী নেয়া হয়েছে। এই ঘটনায় গত ২৮ আগস্ট ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। এমতাবস্থায় মামলার চার্জশিট না দেয়ার জন্য জামিন হবে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ আপনারা জেনে অবাক হবেন যে পুলিশ গিয়ে আমার বোনকে উদ্ধার করলেন। দুইজন ব্যক্তির স্বাক্ষর নিলেন। ৩ ভরি স্বর্ণ উদ্ধারের পরও মুচলেকা লিখে নিয়ে থানা থেকে জিম্মায় দিয়ে ছেড়ে দিলেন। অথচ ৩দিন পর দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে যে থানা পুলিশ নয় আমরা তাদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমার বোনকে ছিনিয়ে এনেছি। শুধু এও নয় থানায় রিমান্ডে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে ধারণ করা ভিডিও চিত্র কিভাবে বাদীর হাতে যেতে পারে। সেই ভিডিও গ্রামের মানুষকে দেখিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। এতে করে আমাদের গৃহকর্মীর কাজে চরম ব্যাঘাত ঘটছে। তাছাড়া গরীব হলেও সমাজে আমাদেরও সম্মান আছে। যা তাদের এই অপপ্রচারের সম্মান নষ্ট হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। এ সমস্ত কাজের স্পষ্ট যে পুলিশের সাথে বাদী পক্ষের গোপন যোগসাজস রয়েছে। জাতির বিবেক সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনাদের প্রতি অসহায় গরীব পরিবারের প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করছি। বিশেষ করে ৩ বছর বয়সী ছোট্ট শিশু কন্যার প্রতি সদয় দৃষ্টি দিয়ে আমাদের লেখনীর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি যে, সরেজমিনে সুষ্ঠতদন্ত সাপেক্ষে নির্যাতিত অসহায় পরিবারকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দিতে একান্ত মর্জি হয়। নিবেদক বেগম পিতা মইনুদ্দিন শাহজাহানপুর বগুড়া মোবাইল ০১৯৬২ ৩৪৮৬২৬ aa
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Leave a Reply