1. admin2@pjbnews.xyz : admin :
  2. admin@pjbnews.xyz : pjbnews.xyz :
শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০১ পূর্বাহ্ন

সুমাইয়া হত্যা না আত্মহত্যা নিয়ে রহস্য!!

Coder Boss
  • Update Time : বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ২৫ Time View
Oplus_131072

স্বামী পরিচয়ে থাকতেন কে এই পলাতক রাজু ?

সুমাইয়ার হত্যা, না আত্মহত্যা ? না অর্থের বিনিময়ে মূল ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে?

মোঃ রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ বগুড়া :: বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলায় চাঞ্চল্যকর সুমাইয়া আক্তার (৩২) রহস্যজনক ভাবে মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের তদন্তেরও অপমৃত্যু হয়েছে। আড়িয়া ইউনিয়নের রহিমাবাদ শালুকগাড়ী গ্রামে পুকুরপাড় এলাকায় অহেদ আলী (৭০)’র ভাড়া বাড়িতে (গত ২৫ জুন) সকালে ঘরের তীরের সাথে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয় সুমাইয়ার। আরো ২ দিন আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলছে পুলিশ।
সুমাইয়াকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে, দাবী করছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। আর সুরতহাল প্রতিবেদনে লাশের প্রকৃত তথ্য গোপন করে পুলিশ তদন্তেরও অপমৃত্যু হয়েছে, বলছেন তাঁরা।
গত রোজার মধ্যে উপজেলার খরনা ইউনিয়নের ধাওয়াপাড়া গ্রামের হায়দার আলীর পুত্র রাজু (৩৮) ও সুমাইয়া স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে, ওই বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। রাজুর ভাতিজা পরিচয়ে ধাওয়াপাড়া গ্রামের মতিউর রহমান মতুল এর ছেলে রাকিবুল ইসলাম (৩৬) ওই বাড়িতে প্রায়ই যাতায়াত করতেন।
নিহত সুমাইয়া আক্তার উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের পারতেখুর মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত জহুরুল ইসলামের মেয়ে। প্রায় ৮ বছর আগে সুমায়ার বিয়ে হয়। সেই স্বামীর থেকে মেয়েটির তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার পর মাঝিড়া ইউনিয়নের ডোমনপুকুর নতুনপাড়া (টিকাদারপাড়া) গ্রামে বাপ্পী (৪২) নামের এক যুবকের সাথে সুমাইয়ার দ্বিতীয় বিয়ে হয়েছিলো। বাপ্পী ছিলো সুমাইয়ার দ্বিতীয় স্বামী। এদিকে বাপ্পি মানসিক রোগগ্রস্ত হলে রাজু নামে এক রেন্ট এ কার ব্যবসায়ীর সাথে সুমাইয়ার পরিচয় ঘটে। পরে সে রাজুকে স্বামী পরিচয় দিয়ে তারা ওয়াহেদ আলীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে।
সুমাইয়া নিহতের ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা বা, অন্য কোন মামলাও হয়নি। গলায় রশি পেঁচিয়ে সুমাইয়া আত্মহত্যা করেছে আর পুলিশের কাগজ-কলমে রশি দিয়ে আত্মহত্যা করা হয়েছে।
নিহত সুমাইয়ার নিহত হওয়ার এক সপ্তাহ আগে ভাড়া বাসায় গভীর রাতে অজ্ঞাত কোন ব্যক্তি ঘরের জিনিসপত্র ওলট পালট করেছে ও লাশ উদ্ধার হওয়া ঘরটির জিনিসপত্র গুছিয়ে রেখেছে। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশের নির্দেশে পুরো বাসাটি তালাবদ্ধ করে রেখেছিলো বাড়ির মালিক। ঘটনাটি জানা জানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
নিহতের পরিবারের দাবী সুমাইয়াকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে, রাজু ও তাঁর সহযোগীরা। পুলিশ লাশের সুরতহালে তথ্য গোপন করে ময়নাতদন্ত ভিন্ন খাতে নেয়ার কথা বলছেন তাঁরা।
সুমাইয়ার লাশের মাথা স্বাভাবিক। মুখমন্ডল গোলাকার। চোখ বন্ধ ও মুখ বন্ধ, সামান্য জিহ্বা লাগানো। গলায় অর্ধচন্দ্রাকৃতির দাগ পরিলক্ষিত হয়। হাত দুটি শরীরের সাথে লাগানো। লাশ ফুলে যাওয়ায় শরীরে তেমন কোন চিহ্ন, স্বাভাবিক ভাবে দেখা বা বোঝা সম্ভব হচ্ছে না। মৃতের শরীরে ছিলা ভাব শরীর অর্ধ পচন হওয়ায় শরীরে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। পা দুটি লম্বালম্বি আছে। অস্থিসন্ধি শক্ত হয়েছে। তাপমাত্রা ঠান্ডা। মরনোত্তর কালশিরা কলামে লেখা রয়েছে, গলায় অর্ধচন্দ্রাকৃতির দাগ। আংশিক পচন, নাক ও মুখ দিয়ে তরল পদার্থ বের হতে দেখা যায়। ২-৩ দিন পূর্বে (গত ২৫ জুন লাশ উদ্ধারের) ভিকটিমের মৃত্যু হয়েছে মর্মে প্রাথমিক ধারনা হচ্ছে। মৃতদেহ অর্ধ পচন হওয়ায় মৃত্যুর সঠিক কারন নির্ণয় ও ধর্ষণ সংক্রান্ত পরীক্ষা করা প্রয়োজন। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মৃতা তাঁর স্বামীর সঙ্গে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
নিহতের ভাই থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেন।
নিহত সুমাইয়ার বাসার বারান্দার গ্রীল ভিতর থেকে তালাবদ্ধ ছিলো। পুলিশ এসে গ্রীলের বাহির থেকে ভিতরের সেই তালা ভেঙ্গে বাসার ভিতরে প্রবেশ করে। সুমাইয়া যে ঘরে ঝুলছিলো সেই ঘরের দড়জা ভিতর থেকে হ্যাজবোল্ড (লোহার সিটকিরি) আটকানো ছিলো। অন্য ঘরের দড়জা বাহির থেকে হ্যাজবোল্ড আটকানো ছিলো। পুলিশ বাহিরের হ্যাজবোল্ড খুলে ভিতরে প্রবেশ করে। ঘরের মাঝখানে খোলা অবস্থায় প্লাস্টিকের আরেকটি দড়জা আছে। সেখান দিয়ে ঢুকে সুমাইয়ার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাওয়া যায়। লাশের পায়ের কাছেই কোলবালিশ ছিলো। ঘরে এমন কিছু পাওয়া যায়নি, যার উপরে দাঁড়িয়ে ঘরের তীরের সাথে ওড়না পেঁচানো যায়।
লাশের বুকে রক্ত ও পেটিকোট উল্টো করে পড়া ছিলো (ফিতা বাঁধার অংশ কোমড়ের পিছনে বাঁধা ছিলো)। হাতের কুনুই থেকে নিচ পর্যন্ত রক্তাত্ব জখম। সুমাইয়াকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখে পালিয়ে গেছে বলে, এমন ধারণা করেন।
বাড়ির মালিক অহেদ আলীর স্ত্রী (৬০) বলেন,গত রোজার মধ্যে ইফাতারের কিছু সময় আগে রাজু ও সুমাইয়া আমাদের কাছে বাসা ভাড়া নেয়ার জন্য আসেন। রাজুর ভাতিজা পরিচয়ে রাকিবুল ইসলাম নামের একজন যাতায়াত করতো। দীর্ঘ ৪ মাস পর সুমাইয়ার ঝুলন্ত লাশ ঘরের ভিতরে পাওয়া যায়।
পুলিশের নির্দেশে আমরা বাসাটি তালা দিয়ে রাখি। সম্প্রতি এক রাতে অজ্ঞাত কোন ব্যক্তি তালা খুলে প্রবেশ করে। সুমাইয়ার লাশ পাওয়া যায়, ওই ঘরের জিনিষ পত্র গুছিয়ে রাখে ও আরেকটি ঘরের জিনিসপত্র লন্ড ভন্ড। আমরা ধারণা করেছিলাম চোর এসেছে, কোন চুরি হয়নি। ঘটনাটি আমরা ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য তাজুল ইসলামকে জানাই।
লাশের গেঞ্জিতে বুকের অংশ জুড়ে রক্ত ছিলো। হাতে জখমের মত চিহ্ন ছিলো ও কুনুইয়ের নিচ থেকে রক্ত জমাট বাঁধা।
সুমাইয়ার মা আবেদা বলেন, আমার মেয়েকে পরিকল্পিত ভাবে রাজু ও তাঁর সহযোগীরা হত্যা করেছে। আমার মেয়ের গেঞ্জিতে বুকের অংশে রক্ত ছিলো পুলিশ সুরতহালে তা উল্লেখ করেনি। আমার মেয়ের লাশে হাত ছড়ানো এবং জখম থাকলেও পুলিশ সুরতহালে তা উল্লেখ করেনি। হাত সোজা ছিলো এবং শরীরে জখমের চিহ্ন নাই বলে সুরতহালে মিথ্যা লিখেছে।
সুমাইয়ার চাচা বলেন, সুমাইয়াকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। সুমাইয়ার গলায় ওড়না পাওয়া গেলেও, কোথাও রশি আবার ওড়না লেখা রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের কাগজ নিতে থানায় অনেক দিন থেকে ঘুরছি কিন্তু পুলিশ আমাদের তা দেয় নাই। রাজুর সাথে সুমাইয়ার বিয়ে হয়নি।
সুমাইয়ার সাথে স্বামী পরিচয়ে থাকা রাজু পলাতক রাজুর ভাতিজা পরিচয়ে ভাড়া বাসায় যাতায়াতকারী রাকিবুল রাজুর ব্যবসায়িক অংশিদার ছিল বলে জানায়।
খরনা ধাওয়া পাড়া গ্রামে এবং খরনা হাট এলাকার অনেকেই পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, রাজু এক সময় মাইক্রো বাস চালাতেন। সুমাইয়ার ছোট ভাই কাউসার আহমেদ জানান রাজু ও তার সহযোগীরা সুমাইয়াকে দিয়ে মাদক বিক্রি করে নিচ্ছে গত তিন মাস আগে এমন কথা জানার পর মাদক ব্যবসা থেকে বিরত থাকতে বলেন তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজু ও তার সহযোগীরা তাকে মারপিট করে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

© All rights reserved © 2025 Coder Boss

Design & Develop BY Coder Boss